সবাই ভ্রমণ করতে চাইলেই কেন যেন, শুধু বিদেশের দিকে আগ্রহী হই কিন্তু এই করোনা কালে দেশের বাইরেতো যাওয়া যাবে না। যারা পর্যটন নিয়ে কাজ করে তাই আমাদের এই সুযোগে দেশের পর্যটন নিয়ে কাজ করতে হবে।
ভিন্ন দেশীও নামীদামী বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান যেমন চিনের প্রাচীর, নীল নদ, ডিজনিল্যান্ড, আইফেল টাওয়ার, সিডনি, ক্যালিফোর্নিয়া, আগ্রা, লাস ভেগাস, সান সিটি, হাওয়াইই, মায়ামি এইগুলোও চেয়ে যে, আমাদের দেশের পর্যটনীয় স্থান কক্সবাজার এর মতো সোনালী টট্টরেখা, কুয়াকাটার মতো বিশাল সমুদ্র সৈকত, পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, ময়নামতি, পাহাড়পুর, মাধবকুন্ড, জাফলং, সবুজের রাজ্যে সুন্দরবন ইত্যাদি ইত্যাদি উপস্থাপন করতে হবে।
অন্যের সফলতা আর নিজের ব্যর্থতা দেখে দুর্বল হয়ে পড়ি আমরা, আর তাই হয়তো ছুটে যায় ভিন্ন দেশে। কিন্তু এই দেশেও আছে ভ্রমণ প্রেমীদের জন্য দর্শনীয় স্থান। আমাদের যাবতীয় পুড়া কৃতি সমূহ এবং নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য স্থান গুলো পর্যটকদের সুবিধা খেয়াল রেখে ঢেলে সাজাতে হবে আরোও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করতে হবে সবার সামনে। কিন্তু শুধু করোনা কালে নয় করতে হবে স্থায়ী ভাবে।
আমাদের দেশের কক্সবাজার, যেখানে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, যার তীর ঘেসা পাহাড়ের সাড়িতে বাহারি গাছের হরেক রকমের মেলা। কুয়াকাটাই স্বর্গীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মাঝে যেখানে দেখা যায় পৃথিবীর দুর্লভ দৃশ্য এককী টট্ট রেখাই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত। সেখানে কেন মানুষ যাবে ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরা বা ওয়াইকিকি ব্রিজে ?
তার কারণ হলো পর্যটকদের বিশেষ কিছু সুবিধা। আমি মনে করি, আমরা সবাই মিলে কাজ করলে আমরাও সেই সুবিধা দিতে পারবো।
আমাদের দেশ শুধু বন্যা ও খরার দেশ নয়। বরং এই দেশ চিম্বুক হিমছড়ির দেশ, এই দেশ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের দেশ। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে শোভাময় এক লীলাভূমি। এই দেশের প্রতিটি পরাতে পরাতে ছড়িয়ে আছে অপার সৌন্দর্যের সমাহার। সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যতা বহুগুণ বাড়িয়েছে সবুজে শোভিত আমাদের পর্যটনের স্থান গুলো।
যেভাবে আমাদের দেশের মানুষেরা পর্যটন প্রেমী হচ্ছে তাতে আগামী দিন গুলোতে তারা নিজেদের দেশকে জানার জন্য হলেও ঘুরতে বের হবে।
তবে হে, আমরা যারা পর্যটন নিয়ে কাজ করি আমাদের করোনা পরিস্থিতি সব এলোমেলো করে দিয়েছে। সারাবিশ্বে স্থবির হয়ে পড়েছে পর্যটন। তাই বলে তো আর জীবন থেমে থাকবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলে পর্যটনখাত নিয়ে কাজ করে দেশ কে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজন শুধু প্রসার প্রচারণা ও সঠিক পরিকল্পনা।
ভাবনায় ছিলনা পর্যটনকে পেশা হিসেবে নিবে। এখন তার নেশা ও পেশা একটাই আর সেটা হলো পর্যটন।জীবনের গতিপথ কি হবে তা আগে থেকে বলা মুশকিল। ভবিষ্যৎ সবসময়ই অনিশ্চিত। কেউ জানে না জীবনের মোড় কখন কিভাবে ঘুরে যায়। সময় ও বাস্তবতা জীবনের গতিপথ ঠিক করে দেয়। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে উঠা।
আমি বলছি “মোঃ সাইফুল্লার রাব্বী“ প্রভাষক, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ড্যাফোডিল ইনিস্টিউট অব আইটি। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান – বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ট্যুরিজম ইনোভেশন।
তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো কেটে গেছে বগুড়ায়। যদিও তার নিজ জেলা গাইবান্ধায় যেখানেই তার প্রাথমিক শিক্ষার হাতে খড়ি।
মাধ্যমিক শিক্ষার সমাপনি নানার বাড়ি থেকে দাড়িদহ উচ্চ-বিদ্যালয়ে। উচ্চ-মাধ্যমিক পড়াশুনা বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ,বগুড়া থেকে। জীবনের বেশিভাগ সময় বগুড়ার সংকৃতির সাথে মিশে গেছে স্কুল, কলেজ ও নানার বাড়ি বগুড়ার হওয়ায়। কলেজ জীবন তার জীবনের গতিপথ বদলে দিয়েছে খানিকটা। ভালো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে তার ভাবনা এখাই থেকেই শুরু।
তার জীবনটা সাজানোর পেছনের কারিগর অনেক গুলো মানুষ তার মধ্যে তার পরিবার সহ, নানা-নানি, খালামনি ও তার মামারা অন্যতম। সবসময় সাহস যুগিয়েছে নানাভাই আর বুদ্ধি ও সার্বিক সহযোগিতা করেছেন খালামনি।তার বাসা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি। ২০১০-১১ সেশনের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারনি। পরে নৃবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার তীব্র ইচ্ছা। আবার পড়াশুনা শুরু করল নতুন উদ্যমে এবার লক্ষ্য একটাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া। আল্লাহর অশেষ কৃপায় ২০১১-১২ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় খ- ইউনিটে ১৬২৫ ও ঘ- ইউনিটে ৩৭ তম মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
ইচ্ছা ছিল আইন অথবা অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করার। খ- ইউনিটে মেধা তালিকায় পেছনে পরায় সে ইচ্ছা পূরণ হলোনা।কিন্তু ঘ- ইউনিটে ৩৭ তম হওয়ার সুবাদে বিবিএ নিয়ে পড়ার সুযোগ আছে জেনে কিছুটা আশ্বস্ত হল। তার ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল আর্টস।তাই মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছিল যে বিবিএ নিয়ে পড়তে পারবে কিনা। ঘ- ইউনিটে ভাইভার জন্য ডাক পেয়ে মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিলো কোন বিষয়গুলো পছন্দের তালিকায় দিবে। তার রাসেদ ভাই ও তার বন্ধুদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি পছন্দের তালিকার দিয়েছিল।ভাইভা দেওয়ার পর ট্যুরিজম বিভাগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিল।
ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তি হল।১৬ ই ডিসেম্বর ২০১১ সালে হাজী মুহাম্মদ মুহসিন হলে ই-৮ রুমে উঠে গেল ঢাবির ছাত্র হিসেবে।শুরু হলো এক নতুন জীবনের।ক্লাস শুরু হয়েছিল ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে।সবার সাথে মিশতে শুরু করল। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দুটি বিষয়ের উপর আগ্রহ বাড়তে থাকলো- একটি ঘোরাঘুরি আর অন্যটি ট্যুরিজমের প্রতি ঝোক। কিভাবে ট্যুরিজম জানবে বা বুঝবে কোন কিছুর কূল কিনারা পাচ্ছিল না। একটা প্লাটফর্ম খুঁজতেছিল ট্যুরিজমের জন্য। ২০১২ সালে প্রথম কোন একটা পর্যটন মেলায় কাজ করার সুযোগ পেল সানি, ইয়ামিন, মেহেদি ও রাসেলের সাথে। বিভিন্ন পর্যটন মেলায় অংশগ্রহণ করে তার মধ্যে ট্যুরিজম নিয়ে কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকলো।সিদ্ধান্ত নিল ট্যুরিজম সেক্টরেই ক্যারিয়ার গড়বে। বন্ধুদের নিয়ে ট্যুর করা শুরু করল।ট্যুরিজম নিয়ে যেকোনো অনুষ্ঠান বা মেলা হলে অংশগ্রহণ করতেন।
পাশাপাশি মানুষের সাথে নেটওয়ার্ক বাড়ানো ও সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে কাজ শুরু করেন। পথশিশুদের পড়ানো ও সাথে সময় কাটানোর জন্য উত্তরণ নামে সামাজিক সংগঠনের সাথে কাজ করেছে। লিডারশীপ ও শৃঙ্খলা বিষয়ে শেখার জন্য বিএনসিসি-সেনা শাখায় যোগ দিয়ে কাজ করেছিল ২০১৫ সাল অবদি। ২০১৩ সাল থেকে ট্যুরিজম নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেল বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সাথে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এর সাথে সেচ্ছাসেবী হিসেবে ২১ টি ট্যুরিজম ফেয়ার, ১ টি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও কয়েকটি সেমিনার ও বিবিএ শেষে ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ নিয়ে কাজ করেছে।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সাথে ২০১৫ ও ২০১৭ সাথে হাইজিন ফুড পোগ্রাম নিয়ে কাজ করেছে ফুড রিলেটেড বিষয়গুলো জানার জন্য।টোয়াবের সাথে তিনটি মেলায় ও আটাবের হয়ে একটি ট্যুরিজম মেলায় কাজ করেছে।ঢাবি ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বেনারে ক্যাম্পাস ট্যুরিজম নিয়ে কাজ করেছে।ট্যুর অপারেশন নিয়ে জানার জন্য ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫০ টির অধিক গ্রুপ ট্যুর পরিচালনা করেছে। কিভাবে ট্রাভেল এজেন্সি ও ট্যুর অপারেটর বিজনেস পরিচালনা করতে হয় এর জন্য ২০১৫ সালে ট্রাভেল এজেন্সি ও ট্যুর অপারেশন ম্যানেজমেন্টের উপর ৬ মাসের ডিপ্লোমা করেছে। এমবিএতে গিয়ে ট্যুরিজম নিয়ে আরো বেশি ঘাটাঘাটি শুরু করল।পরার পাশাপাশি ট্যুর অপারেটর বিজনেস করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা শেষ পর্যন্ত করতে পারিনি।২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত ২০ টির অধিক ট্যুর অপারেট করেছিল ট্রাভেল মেমোরিয়ার মাধ্যমে।কিন্তু পথটা এতটা সহজ ছিলনা।তাই তার নিজেকে সারভাইভ করার জন্য এমবিয়ে ফাইনাল পরীক্ষা শেষে ইন্টার্নশিপ না করে ৪ জুন ২০১৭ সিটি এয়ার ইন্টারন্যাশনাল নামে একটা ট্রাভেল এজেন্সিতে সেলস এন্ড মাকেটিং এ ৮০০০ টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেছিল। তার কাজ ছিল এয়ার টিকেটিং নিয়ে। সেই সময় ট্রাভেলিং ও এয়ারলাইনস নিয়ে জানার আগ্রহ বাড়তে থাকলো।যখন সেক্টরে সরাসরি কাজ করছিল তখন ক্যারিয়ারের বিভিন্ন দিকগুলো আরো খোলাসা হয়ে যাচ্ছিল। বুঝতে পারল বাংলাদেশ ট্যুরিজম সেক্টরে তার ক্যারিয়ার গড়া এতটা সহজ হবে না।হাল না ছেড়ে দ্বিগুন মনোবল নিয়ে সামনে এগুতে থাকল লক্ষ্য একটাই এই সেক্টরে তার জন্য একটা জায়গা করে নিবে।পাশাপাশি এই সেক্টরের উন্নয়নে কাজ করবে। সে নিজে ভালো কিছু করতে পারলে কিছু মানুষকে এই সেক্টরে কাজ করার উতসাহ দিতে পারবে। তখনো তিনি বুঝতে পারি নি ট্যুরিজম বিভাগের শিক্ষক হতে হবে।তিনি তার মত কাজ করছিল। প্রফেসর মুজিব উদ্দিন আহমেদ স্যার ও নুসরাত ম্যাম খুব উৎসাহ দিতেন-ভালো কিছু করবে।এই কথাগুলো তার কাছে পুঁজি হিসেবে ছিল।
২০১৭ সালে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে প্রথম ট্রাভেল এজেন্সি এন্ড ট্যুর গাইডিং এর উপরে অতিথি প্রশিক্ষক হিসেবে ক্লাস নেয়ার সুযোগ করে দেন প্রফেসর মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ স্যার। স্যার ট্যুরিজম নিয়ে কাজ করার জন্য খুব উৎসাহ দিতেন ২০১৫ সাল থেকেই এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সাথে আলোচনা করতেন। তিনি যে শুধু উৎসাহ দিতেন সেরকম না পাশাপাশি কাজের সুযোগ করে দিতেন।আর বলতেন “তিনি চাই আপনি এই শিল্পে প্রতিষ্ঠিত হন এবং তার মত নিবেদিত প্রাণ পর্যটন শিল্পে প্রয়োজন- কষ্ট করে লেগে থাকেন সামনের দিন গুলোতে ভালো করবেন।” কথাগুলো হৃদয়ে সাহস জুগিয়েছে অনেক অমসৃণ পথগুলো পাড়ি দেয়ার জন্য।
ট্রাভেল এজেন্সি নিয়ে কাজ করার জন্য তার খালু যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে শুরু এয়ার টিকেটিং এন্ড রিজার্ভেশন NTVQF – level 2 কোর্সটি আটাব ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে ২০১৮ সালের জুলাই নাগাদ শেষ করে। এর মধ্যে কিছু এয়ারলাইনসে ভাইভা দিয়েছিল কিন্তু জব হয়নি। মামুন এয়ার সার্ভিসের(IATA Travel Agency) ম্যানেজার সেলস হিসেবে কাজ করতে থাকে। পাশাপাশি ২০১৮ সালের শুরুর দিকে ইবাইস ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হোটেল ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিথি প্রভাষক হিসেবে ক্লাস নেয়া শুরু করে।২০১৮ সালের ১৭ মে থেকে ড্যাফোডিল ইনিস্টিউট অব আইটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিথি প্রভাষক হিসেবে ক্লাস নিতে থাকে। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ট্রাভেল এজেন্সির জব ছেড়ে দিয়ে অতিথি শিক্ষক, প্রশিক্ষক হিসেবে ক্লাস নেয়া পুরাপুরি শুরু করে দিল। পাশাপাশি ট্যুর গাইডিং এর উপর NTVQF level 1 ট্রেনিং নিল ও টিকেটিং এন্ড রিজার্ভেশনের উপর NTVQF level 4 কম্পিটেন্ট হয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রথম সার্টিফাইড Assessor হিসেবে স্বীকৃতি পেল ২০১৯ সালের শুরুর দিকে।২০১৮ সালের শেষের দিকে আটাব ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের অতিথি প্রশিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিচ্ছে ও বিভিন্ন এসেসমেন্টে কাজ করছে।২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশ হোটেল ম্যানেজমেন্ট এন্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অতিথি প্রশিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ট্যুরিজমের বিভিন্ন বিষয়ের উপর ৩০ টির বেশি প্রবন্ধ বিভিন্ন নিউজে প্রকাশ পেয়েছে।২০১২ থেকে এখন অবদি বাংলাদেশের ২০০ টির বেশি পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছে।২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০০০ ছাত্র-ছাত্রীদের ট্যুরিমের বিভিন্ন বিষয়ে প্রফেশনাল ট্রেনিং দিতে পেরেছে।যাদের মধ্যে অনেকেই এয়ারলাইনস, হোটেল,ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেশন, ট্যুর গাইডিং, প্রশিক্ষক ও উদ্যোক্তা হিসেবে ট্যুরিজম শিল্পে কাজ করছে।বাংলাদেশ ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি শিল্প এবং পেশজীবীদের নিয়ে ট্যুরিজম বিষয়ে গবেষণা, ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং,ট্রেনিং ও পেশাগত দক্ষতার উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার দৃঢ প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ট্যুরিজম ইনোভেশন প্রতিষ্ঠা করেছে।পর্যটনের পথে এই যাত্রাটা এতো সহজ ছিলনা। অনেক অনিশ্চয়তা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।
২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ড্যাফোডিল ইনিস্টিউট অব আইটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেছে। এখন বলার মতো কিছু পরিচয় আছে।অনেকে তাকে পর্যটন পেশাজীবি শিক্ষক, প্রশিক্ষক, প্রবন্ধ লেখক ও ট্রাভেল কনসালটেন্ট হিসেবেই চিনে বা জানে। তার ছাত্র জীবনে পর্যটন নিয়ে যতটা ভালোলাগা- ভালোবাসা কাজ করতো এখন আরো অনেক বেশি কাজ করে।দিন দিন দায়বদ্ধতা বেড়ে যাচ্ছে।তাকে নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা বাড়ছে।একটা জিনিস ভালো লাগে কষ্ট যাই হোক তার পেশনটাকে পেশা হিসেবে পেয়েছি।পর্যটন নিয়ে কাজ উপভোগ করছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে বিবিএ(২০১৬) এবং এমবিএ(২০১৭) শেষ করে এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে পেরে ও ট্যুরিজম জন্য কিছু করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছে।আগামী দিন গুলোতেও পর্যটন শিল্পের সেবক হিসেবে কাজ করার প্রত্যয় রাখছে।পর্যটন শিল্পে ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে নিজের জীবন থেকে একটি শিক্ষা পেয়েছে-এই শিল্পে ক্যারিয়ার গড়ার আগে তিনটি বিষয় মাথায় নিয়ে এগুতে হবে সেগুলো হচ্ছে; আত্মোৎসর্গ,দক্ষতা ও ধৈর্য। এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে যে কাজ করতে পারবে তার সফলতা নিশ্চিত। সময় লাগবে কিন্তু সফল হবেই।
তিনি জানে এখনো তার লক্ষ্যে যেতে পারি নি। ট্যুরিজম শিল্পে টিকে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।যেতে হবে বহুদূর। এখনো তাকে অনেক কথাই শুনতে হয়।মানুষ দেখতে চাই দিন শেষে ফল কি? কিন্তু অনেকে ভুলে যান সফলতার সহজ কোন রাস্তা নেই, সফলতার জন্য অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয়। মানুষ শুধু সফলতার গল্প শুনতেই অভ্যস্ত। প্রথমে এই সেক্টর কাজ করতে এসে পেয়েছে অসহযোগিতা,ঘৃণা, তাচ্ছিল্য আর তিরস্কার। তার পরেও পর্যটন শিল্পকে ছাড়িনি।আকড়ে ধরে টিকে থাকার চেষ্টা করেছে। নিজেই নিজেকে সাহস জুগিয়েছে। সবাই শুধু বলে এই সেক্টরের হাজারো সমস্যার কথা,আবার অনেকেই কিছু দিন কাজ করে এই সেক্টরকে চিরতরে বিদায় জানায়। তার মাথায় একটা বিষয় বারবার নাড়া দিতো পর্যটন শিল্পে আমাদের থাকতে হবে,কাজ করতে হবে। সবাই যদি সুন্দর শিল্প চায় তাহলে সেটা গড়ার জন্য কিছু মানুষকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।তাই সিদ্ধান্ত নিল পর্যটন শিল্পে ত্যাগী মানুষদের তালিকায় তার নামটা লিখাবে।ভালো থাকে আর মন্দ থাকে পর্যটন শিল্প নিয়েই বাকিটা জীবন কাজ করবে। এর মধ্যে আরো অনুপ্রেরণা পেতে থাকল প্রফেসর সৈয়দ রাশেদুল হাসান স্যার, প্রফেসর বদরুজ্জামান ভূইয়া, সন্তোষ কুমার দেব স্যার, মোহাম্মদ রাফিউজ্জামান স্যার সহ অনেকেই বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনিও স্যারদের সাথে কিছু কিছু কাজে অংশ গ্রহণ করতে পেরে কাজ করার ভালো গতি পাচ্ছিল। তার ক্যারিয়ারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রফেসর মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক,টিপু সুলতান স্যার তিনজন মানুষ তার জন্য যথেষ্ট করেছে।ওই সময়গুলোতে ওনারা সহযোগিতা না করলে তার এই শিল্পে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যেত।এখন তার নিজের একটা জায়গা হয়েছে। কিছু মানুষকে জায়গা করে দিতে পারছে।অনেকেই উৎসাহ দিচ্ছে।আবার অনেকের কাছে তিনি নিজেই উৎসাহ ও অনুপ্রেরণার জায়গা করে নিয়েছে।এগিয়ে যাচ্ছে,এগিয়ে যাবে,এগিয়ে যেতে হবে, তার নিজের জন্য- নিজের দেশের জন্য- নিজের পর্যটন শিল্পের জন্য। সুন্দর একটা পর্যটন শিল্প দেখার জন্য স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখাই আবার স্বপ্ন পূরণের জন্য কাজ করে যান।